উলিপুরে ভাঙা ব্রিজে আট বছর ধরে দুর্ভোগ, দেখার কেউ নেই

- আপডেট সময় : ০৯:৩৭:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে

কুড়িগ্রামের উলিপুরে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়ে আছে টানা আট বছর ধরে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থী, রোগী ও ব্যবসায়ীসহ কয়েক হাজার মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলা শহরের হাসপাতাল মোড় থেকে তবকপুর ইউনিয়নের বড়ুয়া তবকপুর বাজারগামী পাকা সড়কের ওপর নির্মিত ব্রিজটি ২০১৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় পানির স্রোতে পিলার ভেঙে উল্টে যায়। এরপর থেকেই সড়কটি কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে স্থানীয়দের যাতায়াত ব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মাঝখানে বিশাল গর্ত তৈরি হয়ে সেখানে যেন একটি ছোট পুকুর সৃষ্টি হয়েছে। দুই পাশে প্রায় এক একর আবাদি জমিও বিলীন হয়ে গেছে। মানুষজন বাধ্য হয়ে কেউ ড্রামের ভেলা ব্যবহার করে, কেউ কৃষিজমির আইল ধরে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন। নারী, শিশু, শিক্ষার্থী কিংবা রোগী—সবার জন্যই এ পথ হয়ে উঠেছে এক নিদারুণ যন্ত্রণার নাম। যানবাহন চলাচল না থাকায় তিন কিলোমিটারেরও বেশি পথ হেঁটে যেতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
বড়ুয়া তবকপুর এলাকার স্কুলছাত্র আরিফ হোসেন বলেন, ‘বেশি পানি থাকলে খুব ভয় লাগে, কখন যে পানিতে পড়ে যাই! অনেক সময় স্কুলেও যেতে পারি না।’
স্থানীয় গৃহবধূ রাহেনা বেগম (৫৫) বলেন, ‘ব্রিজটা আট বছর ধইরা ভাঙা পড়া আছে। কেউ দেখে না। গর্ভবতী বা অসুস্থ মানুষ নিয়া যাওয়া বড় কষ্ট। অনেক সময় রোগী বেশি অসুস্থ হইয়া পড়ে।’
ব্যবসায়ী শহিদুর রহমান (৬০) বলেন, ‘ব্রিজটা ভাঙার পর থেকে ব্যবসা করা কষ্টের হইছে। মালামাল আনানেওয়ায় সমস্যা হয়।’
অটোচালক আমিনুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘ব্রিজটা ভাঙা পড়া আছে আট বছর। এখন মানুষ পারাপার করতে পারে না। অ্যাম্বুলেন্সও আসতে পারে না। রোগী নিয়া ১৫-১৬ কিলোমিটার ঘুরে হাসপাতালে যাওয়া লাগে।’
শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘এই পথে তবকপুর, চিলমারী থানাহাট ও রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। ২০১৮ সালে ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে বহুবার চেয়ারম্যান, এমপি ও এলজিইডির কাছে তদবির করা হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, ‘নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।’